আদালত প্রতিবেদক।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশের বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), দুই উপপরিদর্শকসহ (এসআই) ছয়জনের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদ হোসেনের স্ত্রী তামান্না শারমিনের করা মামলা খারিজ করেছেন আদালত।
গত রবিবার (৬ এপ্রিল) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম এ আদেশ দেন। যদিও বিষয়টি জানাজানি হয়েছে আজ (মঙ্গলবার)। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের সাঁটলিপিকার দীপেন দাশগুপ্ত।
এর আগে, গত ১৫ জানুয়ারি গর্ভের সন্তান নষ্টের অভিযোগ এনে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলার আবেদন করেন ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদ হোসেন প্রকাশ ছোট সাজ্জাদের স্ত্রী তামান্না শারমিন। মামলায় বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আরিফুর রহমান, উপ-পরিদর্শক জগৎজ্যোতি দাস, মনিরুল ইসলাম, আরেক ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হোসেন বাবলা, ‘সন্ত্রাসী’ জাবেদ ও পুলিশের সোর্স আনিকা ইসলামকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল।
মামলার আবেদনে বলা হয়েছিল, গত ৫ ডিসেম্বর ভোরে বাদীর স্বামী সাজ্জাদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করতে নগরের অক্সিজেন মিরপাড়া হাউজিং সোসাইটির ইউনূস টাওয়ারের ভাড়া বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। সাজ্জাদকে না পেয়ে তামান্নাকে নারী পুলিশ ছাড়া আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। থানার ওসি শারমিনকে লাঠি দিয়ে মারধর এবং এসআই জগৎজ্যোতি দাস বাদীর পেটে লাথি মারেন। বাদী তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা থাকায় রক্তক্ষরণে ভ্রূণ নষ্ট হয়ে যায়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাদীকে আদালতে হাজির না করে ৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় হাজির করেন। ৮ জানুয়ারি আদালত বাদীকে জামিন দেন। পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসকেরা জানান গর্ভে থাকা ভ্রূণ নষ্ট হয়ে গেছে।
এরপর শারীরিক পরীক্ষা শেষে গর্ভে থাকা তিন মাসের অনাগত শিশু নষ্ট হয়ে গেছে বলে বাদীকে জানান সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক। এছাড়া অভিযানের সময় পুলিশ বাদীর ব্যবহৃত আইফোন, পাসপোর্ট জব্দ করলেও তা লিস্টে রাখা হয়নি বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
গত ১৫ মার্চ ঢাকার বসুন্ধরা সিটি শপিং মল থেকে সাজ্জাদকে ধরিয়ে দেন লোকজন। এর আগে ২৯ জানুয়ারি তাকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করেন নগর পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ। বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) ফেসবুক লাইভে এসে পেটানোর হুমকি দিয়েছিলেন সাজ্জাদ। তার বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্রসহ ১৫টির বেশি মামলা রয়েছে।
সাজ্জাদকে গ্রেপ্তারের পরপরই গত ৩০ মার্চ নগরের বাকলিয়া এক্সেস রোড এলাকায় একটি প্রাইভেটকারে ‘ব্রাশফায়ার’ করেন তার অনুসারীরা। এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় একজনের, আহত হন আরও দুজন। নিহত ও আহতরা আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী সরোয়ার হোসেন বাবলার অনুসারী।
এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের একজন বখতিয়ার হোসেনের মা ফিরোজা বেগম গত মঙ্গলবার বাকলিয়া থানায় মামলা করেন। মামলায় সাজ্জাদ, তাঁর স্ত্রী তামান্না শারমিনসহ সাতজনকে আসামি করা হয়। মামলার অন্য পাঁচ আসামি হলেন মো. হাছান, মোবারক হোসেন, মো. খোরশেদ, মো. রায়হান ও মো. বোরহান। সবশেষ গত ৬ এপ্রিল নগরের চান্দগাঁও থানার ইট ও বালু ব্যবসায়ী তাহসীন হত্যা মামলায় দ্বিতীয় দফায় সাজ্জাদের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।