আটোমেশন গিলছে চাকরি বাজার

দেশের সবচেয়ে বড় চাকরির বাজার পোশাক শিল্পখাত। সম্ভবনাময় এ খাতে বিনিয়োগ থেমে নেই। বাড়ছে কারখানার সংখ্যা, তবে সে তুলনায় কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে না চাকরির বাজারে। বৈশ্বিক মন্দায় কারখানার পরিধি ছোট হওয়ার পাশাপাশি অটোমেশনের কারণে থমকে আছে চাকরির বাজার।

বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ)ও বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) বায়োমেট্রিকস ডেটাবেজ তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে ৩৩ লাখ ১৭ হাজার ৩৯৭ জন শ্রমিক রয়েছেন। এরমধ্যে ওভেন গার্মেন্টসগুলোতে ১৬ লাখ ১৭ লাখ ১৪২ জন এবং নিট গার্মেন্টেসে ১৭ লাখ ২৫৫ জন কাজ করছেন। কারখানাগুলোতে রয়েছেন ২৭ লাখ ৮৮ হাজার ৬১৬ জন নারী এবং ৫ লাখ ২৮ হাজার ৭৮১ জন পুরুষ শ্রমিক। অথচ ২০২২ সালের শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী তৈরি পোশাক খাতে মোট লোকবল ৪৩ লাখ ১৬ হাজার জন কর্মরত থাকার তথ্য জানান বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস)।

nagad
nagad

কারখানার পরিমাণ ক্রমান্বয়ে বাড়লেও চাকরির বাজারে সংকট সৃষ্টি হওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিকেএমএ-এর পরিচালক মোহাম্মদ শামসুল আজম সিভয়েস২৪-কে বলেন, ‘চাকরি বাজার আসলে কমেনি। এটা বলতে পারেন অটোমেশনে পোশাক খাত পুরোপুরি অপারেশনে গেলে লোকবলের চাহিদা কিছুটা কমবে। তবে আমরা অটোমেশনে যেতে ১০ বছরেরও বেশি সময় লাগবে বলে মনে হয়। কারণ আমরা কোভিড ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মোটামুটি বেশ কিছুটা পিছিয়ে পড়েছি। আমেরিকা-চীনের মতো কিছু দেশ আমাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।’

বর্তমান এই খাতের চাকরির বাজার নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের এখনও অনেক লোকবলের চাহিদা রয়েছে। অনেকে ঈদের ছুটিতে বাড়িতে গিয়ে ফিরে আসেনি। এছাড়াও বাংলাদেশে এখন অনেক বিনিয়োগের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বিনিয়োগ হলে কাজের ক্ষেত্র আরও বাড়বে। আশা করি দক্ষ জনশক্তি তৈরি হলে কাজের ক্ষেত্র আগামী দশ বছরে কমবে না। দশ বছর বলতে অটোমেশন চালু হওয়ার কথাই বলছি। অটোমেশন চালু হলে তখন হয়তো চাকরির বাজারে কিছুটা প্রভাব পড়বে।’

এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএ’র পরিচালক ও আর্জেন্টা গার্মেন্ট ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাকিব আল নাছের বলেন, ‘সরকারের কিছু পলিসি ও আমদানিতে কাস্টমসের কিছুটা শিথিলতা পেলে বাংলাদেশের গার্মেন্টস খাত অটোমেশনে চলে যাবে। অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান অটোমেশনে অপারেশনে যেতেও প্রস্তুত। এর জন্য একটু সাপোর্ট লাগবে।’

অটোমেশনে গেলে কর্মক্ষেত্রে প্রভাব পড়বে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রভাব পড়বে না। আগে যেখানে দুই থেকে তিন জন লোক কাজ করতো, সেখানে একজন কাজ করবে। এক্ষেত্রে আমাদের কাজের ক্ষেত্র বড় হবে। উৎপাদনও বাড়বে।’

নতুন করে কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি না হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা তখন দক্ষ জনবলকে ডিস্ট্রিবিউট করবো। যারা কাজে বহাল আছে, তারা থাকবে। কিন্তু পরবর্তীতে নতুন কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি হওয়ার জন্য বিনিয়োগ হতে হবে। এ খাতটি যেহেতু সম্ভাবনাময়, বিনিয়োগ বাড়বেই। তবে এটি ঠিক যে, লোকবলের সাপোর্টিভ হিসেবে অটোমেশন কাজ করবে। তাই নতুন বিনিয়োগ না হলে কাজের ক্ষেত্র কিছুটা সংকুচিত হবে।’

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

সাম্প্রতিক