আন্দোলনে সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের ৫ দফা

ইমরান নাজির।

চট্টগ্রামের সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির প্রশাসনিক অনিয়ম, দুর্নীতি এবং দায়িত্বহীনতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে পাঁচ দফা দাবি তুলেছেন শিক্ষার্থীরা।

৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম শেষেও তাদের দাবি পূরণ না হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও নন-একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনসহ বৃহৎ আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

গতকাল সোমবার (১ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলন করে এ হুঁশিয়ারি দেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

সাংবাদিকবৃন্দের সাথে সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে তাদের শিক্ষাজীবন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে শিক্ষার্থীরা চরম অনিশ্চয়তায় ভুগছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও প্রশাসনিক দুর্নীতি ও সার্টিফিকেট জালিয়াতির মতো গুরুতর অপরাধগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত বা প্রতিকার না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ।

শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘গত ২৯ সেপ্টেম্বর আমরা পাঁচ দফা দাবি পেশ করেছি এবং দাবি পূরণে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম প্রদান করেছি। আল্টিমেটাম শেষ হওয়ার পর আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমরা আলোচনায় বসি। আলোচনায় প্রশাসন আমাদের কিছু দাবির বিষয়ে কাজ শুরু করার তথ্য প্রদান করেছে। কিন্তু আমাদের দাবিগুলো এখনো পুরোপুরি পূরণ হয়নি। এরই প্রেক্ষিতে, আমরা আমাদের চলমান আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিচ্ছি এবং সকল প্রকার একাডেমিক ও নন-একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের সিদ্ধান্ত জানাচ্ছি।’

তারা বলেন গত ২৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষার্থীদের নাম ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. মোজাম্মেল হককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে একটি বিতর্কিত মানববন্ধন করা হয়। সেই মানববন্ধের বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রচার করা হয়, যা শিক্ষার্থীদের প্রকৃত দাবির ভুল ব্যাখ্যা তুলে ধরে। এরই প্রতিবাদে এবং নিজেদের যৌক্তিক অবস্থান পরিষ্কার করতে তারা একত্রিত হয়ে আন্দোলনে নেমেছে।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো—

► বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট জালিয়াতি, অর্থনৈতিক অনিয়ম এবং প্রশাসনিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

► শিক্ষার্থীদের চলাফেরা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা ব্যাহত না হয়, তা নিশ্চিত করতে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

► শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা ইউজিসির অধীনে একটি স্বতন্ত্র তদারকি কমিটি গঠন করে প্রশাসনিক কার্যক্রম তদারকি করতে হবে, যাতে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ সরাসরি উপস্থাপনের সুযোগ থাকে।

► শিক্ষার্থীদের নাম ব্যবহার করে যে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালানো হয়েছে, তা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রকৃত উদ্দেশ্য ও দাবিসমূহ সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে হবে।

► বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ প্রশাসনে অভিন্ন নীতি প্রতিষ্ঠা করে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে প্রশাসনিক সংকটের পুনরাবৃত্তি না ঘটে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

সাম্প্রতিক