প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ মোকাবিলায় চট্টগ্রামে ১০৩৪টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। একই সঙ্গে ১১৪০টি বিদ্যালয় ও নয়টি মুজিব কেল্লা আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
রবিবার (২৬ মে) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সমন্বয়ের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে খোলা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
nagad
nagad
এর আগে, শনিবার (২৫ মে) রাতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় চট্টগ্রামে ৭৮৫টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। পাশাপাশি ১১৪০টি বিদ্যালয় ও নয়টি মুজিব কেল্লা আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বরত উচ্চমান সহকারী হাসিবুল হাসান সিভয়েস২৪-কে বলেন, ‘গতকাল (শনিবার) রাতে প্রথমে ৭৮৫টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত ছিল। পরে আজ সকালে আরও ২৪৯টি আশ্রয়কেন্দ্র বাড়ানো হয়েছে। এখন সর্বমোট ১০৩৪টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। পাশাপাশি ১১৪০টি বিদ্যালয় ও নয়টি মুজিব কেল্লা আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’
এদিকে, শনিবার (২৫ মে) রাতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, আশ্রয়কেন্দ্রের পাশাপাশি সিভিল সার্জন চট্টগ্রাম কর্তৃক ইউনিয়ন পর্যায়ে ২০০টি, প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫টি, আর্বান ডিসপেন্সারি ৯টি এবং ৫টি জেনারেল হাসপাতালসহ মোট ২৯৫টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। মজুত রাখা হয়েছে পানি বিশুদ্ধকরণের জন্য প্রায় তিন লাখ ট্যাবলেট ও চার লাখ খাবার স্যালাইন।
সন্দ্বীপ, আনোয়ারা, বাঁশখালী, মিরসরাই, সীতাকুণ্ড ও কর্ণফুলী উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের বিশেষভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে চট্টগ্রামে ব্যাপক বর্ষণ ও পূর্ণিমার কারণে তীব্র জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা থাকায় উপকূলবর্তী এলাকাসমূহ ও পাহাড়ি এলাকা থেকে লোকজনকে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরিয়ে নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ইউএনও এবং এসিল্যান্ডদের নির্দেশনা দেন জেলা প্রশাসক।
এসময় সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ শুকনো খাবার, মোমবাতি, ওষুধ, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও খাবার স্যালাইন মজুদ রয়েছে বলে জানানো হয়। এছাড়া বিদ্যমান আশ্রয়কেন্দ্র ও কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার উপযোগী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের নিমিত্তে প্রস্তুত রাখার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা শিক্ষা অফিসার ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে অনুরোধ জানানো হয়।
সভায় চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, জেলা পরিষদের সকল জনপ্রতিনিধিদের নিজ এলাকায় অবস্থান করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রয়োজনে উপজেলাসমূহে অবস্থিত ডাকবাংলো ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এসময় মানুষের পাশাপাশি গবাদি পশু ও অন্যান্য প্রাণীর সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সকলকে নির্দেশনা দেন এ জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মো. ফখরুজ্জামান। এছাড়াও, ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) ৮৮৮০ জন স্বেচ্ছাসেবক সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া রেড ক্রিসেন্টের ৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবক ছাড়াও বিএনসিসি ও স্কাউট এর স্বেচ্ছাসেবকদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সমন্বয়ের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে; যার নম্বর- ০২৩৩৩৩৫৭৫৪৫।