১৫ বছর পর তাফসির মাহফিলের অনুমতি মিলেছে চট্টগ্রামের প্যারেড ময়দানে। পাঁচ দিনব্যাপী ঐতিহাসিক তাফসিরুল কোরআন মাহফিলের অনুমতি পেয়েছে আয়োজক সংগঠন ‘ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদ, চট্টগ্রাম’। আগামী বছরের ২৭ জানুয়ারি শুরু হয়ে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত এ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। তবে এখনো আলোচক-অতিথি কারা থাকছেন তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) আয়োজক সংগঠন ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদ, চট্টগ্রামের সভাপতি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ তাহের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের কারণে বহু বছর আমাদের ঐতিহাসিক এ আয়োজন থেকে বঞ্চিত ছিল চট্টগ্রামবাসী। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর আমরা আবারো চট্টগ্রামবাসীকে সেই ঐতিহাসিক তাফসিরুল কোরআন মাহফিল উপহার দেয়ার সুযোগ পেয়েছি। মাহফিল আয়োজনে আমাদের প্রস্তুতি চলছে। শিগগির মুফাসসিরে কোরআনদের নাম জানানো হবে।’
এদিকে দীর্ঘদিন পর ফের ধর্মীয় ওই আয়োজনের সিদ্ধান্তে উচ্ছ্বসিত ভক্ত-অনুরক্তরা। আয়োজনের ঘোষণার পর পরই তাদের উচ্ছ্বলতা প্রকাশ পেয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। মাহফিল আয়োজনের অনুমতি দেওয়ায় চট্টগ্রাম কলেজ কর্তৃপক্ষের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মাহফিলের বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছেন সবাই।
এ বিষয়ে চট্টলার কন্ঠকে ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) সাব-ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার রিদুয়ানুল বলেন, ‘পঞ্চম শ্রেণিতে থাকতে সর্বপ্রথম তাফসির মাহফিলে এসেছিলাম। ১৯৯৫ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত প্রতিটি মাহফিলে অংশ নিয়েছি। প্রিয় বক্তা আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর ওয়াজ শুনতে আমাদের দীর্ঘ অপেক্ষা ছিল। মাহফিল আবারও শুরু হচ্ছে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আমার প্রিয় আল্লামা এখন আর আমাদের মাঝে নেই!’
সাতকানিয়ার বাসিন্দা হোসেন তারেক বলেন, ‘দীর্ঘ বছরের আয়োজন ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছিল। কিন্তু ফ্যাসিস্ট সরকার সেই ঐতিহ্য ধরে রাখতে দেয়নি। সারাদেশের মতো ঐতিহাসিক এই কোরআনের মাহফিলও বন্ধ করেছে। স্বাধীনতার পর আবারো এ আয়োজন আমাদের উচ্ছ্বসিত করেছে।’
প্রসঙ্গত, সকাল-বিকাল খেলাধুলা, শরীরচর্চার জন্য যেমন খ্যাতি চট্টগ্রামের প্যারেড ময়দানের, ঠিক তেমনি ধর্মীয় আয়োজনের স্মৃতি মিশে আছে এ মাঠের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদী, মাওলানা লুৎফর রহমানসহ অসংখ্য ধর্মীয় বক্তার তাফসির জনপ্রিয় ছিল মাহফিলে। নানা সময়ে বাধার মুখে পড়ে শেষমেশ মাহফিল অনুষ্ঠিত হলেও ২০০৯ সালের পর একেবারেই বন্ধ হয়ে যায় ঐতিহাসিক এ আয়োজন।