ছাত্র আন্দোলনে অস্ত্র উঁচানো যুবলীগকর্মী সোলেমান বাদশা গ্রেফতার

মিঠুন সাহা

চট্টগ্রামের কোতোয়ালীতে গত ৪ আগস্ট সরকার পতন আন্দোলন চলাকালে একে-৪৭ রাইফেল দিয়ে প্রকাশ্যে গুলি চালানো যুবলীগকর্মী সোলায়মান বাদশাকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। তবে তার কাছ থেকে কোনো অস্ত্র উদ্ধার করা যায়নি।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী থানার নদনা ইউনিয়নের কালুয়াই গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব-৭ ও র‍্যাব-১১ এর যৌথ আভিযানিক দল।।

গ্রেপ্তার সোলায়মান বাদশা নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি থানার কালুয়াই গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে। তিনি আওয়ামী যুবলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। চসিকের চট্টগ্রাম-১০ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন বাচ্চুর অনুসারী হিসেবে পরিচিত তিনি।

র‍্যাব জানিয়েছে, গত ৪ আগস্ট এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে একে-৪৭ রাইফেল দিয়ে সোলায়মান বাদশা ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুল ছোঁড়ে। এসময় চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মো. ইমরান হোসেনের (২১) মাথায় কোপ মারে। সে কৌশলে তা প্রতিহত করলে তার বাম হাতের দুইটি আঙ্গুল হাড়সহ আংশিক কেটে গুরুতর রক্তাক্ত যখম হয় এবং অপর একটি কোপ তার তলপেটে লেগে গুরুতর রক্তাক্ত জখমপ্রাপ্ত হয়ে সে মাটিতে পড়ে যায়। এ ঘটনায় তার পিতা বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় গত ৩ সেপ্টেম্বর একটি মামলা দায়ের করেন।

র‍্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. শরীফ-উল-আলম জানান, তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাকে কোতোয়ালী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

কে এই সোলায়মান বাদশা?

ফুটপাতে চাঁদাবাজি-ছিনতাই-ভাড়াটে সন্ত্রাসী-মাদক ব্যবসা সব অপকর্মের হোতা সোলাইমান বাদশা। নগরীর দুই নম্বর গেট থেকে অক্সিজেন মোড় অবধি তার অপরাধের অভয়ারণ্য। প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র নাছিম উদ্দিন সোহেল হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি সোলায়মান বছরের পর বছর ধরে ওই এলাকায় নানা অপরাধ করে বেড়ালেও তার গায়ে তেমন আঁচড় লাগেনি। নগরীর দুই নম্বর গেট থেকে অক্সিজেন পর্যন্ত অবৈধ টেম্পো লাইন থেকে চাঁদাবাজি। নগরীর ফিনলে স্কয়ার, চিটাগং শপিং কমপ্লেক্স বিপ্লব উদ্যান হয়ে ২ নম্বর গেট কর্ণফুলী কাঁচাবাজার পর্যন্ত প্রায় দুইশ ভাসমান ভ্যানগাড়ি বসিয়ে অনুসারীদের দিয়ে প্রতিদিন চাঁদা উঠায় সোলায়মান বাদশা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, আওয়ামী সরকারের সময়ে নগরের দুই নম্বর গেট, ষোলশহর স্টেশন, তুলাতুলি, সিগনাল এলাকা, আল-ফালাহ গলি, মেয়র গলিসহ আশপাশ এলাকায় মাদক ব্যবসা, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, দখল বেদখল, অপহরণ, অবৈধ গেস্ট হাউজ, অস্ত্র ব্যবসা, ভাড়াটে খুন করাসহ যত অপকর্ম হয়েছে সেগুলোতে তার গ্রুপের কেউ না কেউ জড়িত থাকে। তখন ভয়ে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলতো না।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

সাম্প্রতিক