পাভেল রহমান মিশু।
প্রকাশিত ১৫ আগস্ট ২০২৪।
চট্টগ্রাম নগরের নিউমার্কেট চত্বরে সপ্তাহব্যাপী ‘রেজিস্ট্যান্স উইক’র অংশ হিসেবে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বাংলাদেশ ছেড়ে পলায়নকারী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচারসহ চার দফা দাবিতে শিক্ষার্থী ও নানা পেশার মানুষ জড়ো হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে নিউমার্কেট এলাকায় আসতে শুরু করেন তারা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সকাল ১০টার পরপরই প্রায় হাজারখানেক শিক্ষার্থী-জনতা উপস্থিত হয় নিউমার্কেট চত্বরে। এ সময় তারা ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, খুনী হাসিনার ফাঁসি চাই’, ‘স্বৈরাচারের গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে’, ‘খুনী হাসিনার ঠিকানা, এই বাঙলায় হবে না’, ‘শেখ হাসিনার দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’—এমন নানা স্লোগান দেন। কয়েক হাজার ছাত্রের জনতার স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত ছিল নিউ মার্কেট এর আশেপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকা।
এদিকে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অবস্থানের কারণে সদরঘাট, কোতোয়ালী, জুবিলী এবং কেসিদে রোডে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বেশিরভাগ সড়কেইথেমে থেমে চলছে যানবাহন।
গত মঙ্গলবার ১৩ আগস্ট থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চার দফা দাবিতে সারাদেশে সপ্তাহব্যাপী ‘রেজিস্ট্যান্স উইক’ কর্মসূচি ঘোষণা করে। এরই অংশ হিসেবে পরপর দুদিন নগরের ষোলশহর স্টেশন এলাকায় মিছিল-সমাবেশ করেন তারা। আজ (বৃহস্পতিবার) ‘জাতীয় শোক দিবসের’ আগেই সর্বাত্মক অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেন তারা।
এর আগে, গত মঙ্গলবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঘোষিত ১৫ আগস্টের সাধারণ ছুটি বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের চার দফা দাবি—
(১) ফ্যাসিবাদী কাঠামোকে ব্যবহার করে ফ্যাসিস্ট হাসিনা এবং তার দল ও সরকার যে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে; সেগুলোর দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে।
(২)সংখ্যালঘুদের ওপর আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী মহাজোটের শরিক দলগুলোর পরিকল্পিত হত্যা, ডাকাতি ও লুণ্ঠনের মাধ্যমে গণ-অভ্যুত্থানকে বিতর্কিত করার প্রচেষ্টায় অংশগ্রহণকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং সংখ্যালঘুদের ন্যায্য দাবি মেনে নিতে হবে।
(৩) প্রশাসন ও বিচার বিভাগে যারা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হামলা, মামলা, এবং হত্যাযজ্ঞকে বৈধতা দিয়েছে এবং ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বারংবার কায়েমের চেষ্টা করছে; তাদের দ্রুততম সময়ে অপসারণ ও নূতন সরকারে তাদের নিয়োগ বাতিল করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
(৪)প্রশাসন ও বিচার বিভাগে যারা এতদিন বৈষম্যের শিকার হয়েছে, তাদের জন্য দ্রুততম সময়ে সুযোগের সমতা নিশ্চিত করতে হবে।