ইমরান নাজির।
বই পড়ুয়া মানুষের ঢল নেমছে ‘পঞ্চম’ বই বিনিময় উৎসবে। সকাল থেকে এক স্টল থেকে আরেক স্টলে ছুটে বেড়াচ্ছে নানান বয়সের বই পোকারা। বইপ্রেমিরা একে অপরের সাথে বিনিময় করছে নিজেদের কাছে জমে থাকা বিভিন্ন বই।
শুক্রবার (৩ মে) দিনভর (সকাল ৯টা থেকে সন্ধা ৬টা) নানান বয়সের বই পড়ুয়া মানুষের পদচারণায় মুখরিত ছিল চট্টগ্রাম নগরের হেলদি ওয়ার্ড খ্যাত জামালখান মোড় এলাকাটি। অনেক জীবনের হাফসেঞ্চুরি (পঞ্চাশোর্ধ্ব) পাড় করা বইপ্রেমিদেরও দেখা গেছে এই বিনিময় উৎসবে।
৫৩ বছরের বই পড়ুয়া ইলিয়াস উদ্দিন মাসুদ। ছোটবেলা থেকেই বই পড়ায় শখ। সংগ্রহে আছে নানান দেশি-বিদেশি বই। ঘরে জমেছে বইয়ের পাহাড়। তাই নতুন প্রজন্মের বই পড়ুয়াদের বই দিতে এসেছেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পেশায় আমি একজন সরকারি চাকরীজীবী। চাকরির নানা চাপের মধ্যেও প্রতিদিন ১০ পেইজ বই পড়া হয়। বন্ধের দিনেও ঘুম থেকে উঠে বই নিয়ে বসে যাই। বর্তমানে নিজের সংগ্রহ প্রায় ৪৫০ বই আছে। আজকে এখনে আসার আগে পড়া ৫টি বই নিয়ে এসেছি।
অন্যদিকে মেয়েকে নিয়ে নাছিরাবাদ হাউজিং সোসাইটির থেকে এসেছেন করিম উল্লাহ চৌধুরী। গেল দুই বছর ধরে মেয়েকে নিয়ে আসেন বলে জানিয়েছেন এই বাবা।
তিনি বলেন, আমরা পাঠক পরিবার। প্রতি বছর বইমেলা থেকে বই কেনা হয়। ফলে ঘরে বই জমতে জমতে রাখার স্থানের অভাব দেখা দিয়েছে। আমরা বাপ-বেটি মিলে ১০টা বই নিয়ে রেজিস্ট্রেশন করেছি।
এবারের উৎসবে স্টল বসেছে মোট ১১টি। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ধর্মতত্ত্ব, কথা সাহিত্যিক (জাফর ইকবাল সমগ্র ও হুমায়ন সমগ্র), দর্শন, ক্যারিয়ার ও বিজ্ঞান, শিশুতোষ, কবিতা, ইতিহাস ও রাজনীতি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের আত্মজীবনী, একাডেমিক ও ট্যাবলয়েড ইত্যাদি বইগুলো রয়েছে।
নিয়ম অনুযায়ী যে কেউ পাঁচটি বই জমা দিয়ে নিতে পারবে পছন্দের অপর ৫টি বই। তবে বেঁধে দেওয়া আছে নিয়ম। যে ক্যাটাগরি বই দিবে; ঠিক সেই ক্যাটাগরিরই বই নিতে পারবে। তবে ছাড় দেওয়া আছে একাডেমি সম্পর্কিত বইয়ের ক্ষেত্রে। নেই কোন নির্দিষ্ট সংখ্যা। দিতে ও নিতে পারবে অসংখ্য বই।
জানতে চাইলে এ বিষয়ে উৎসবের আয়োজক মাহিন আজরফ বলেন, টানা ৫ বছর আমরা বই বিনিময় উৎসবের আয়োজন করছি। ফলে অনেকে বই প্রেমিদের সাথে প্রতিনিয়ত আমাদের যোগাযোগ হয়। এবার অনেকটাই ক্ষুদে বই প্রেমিদের আগ্রহ দেখে আয়োজন করেছি। সবার সহযোগিতা পেলে আরও বড় পরিসরে আয়োজনের পরিকল্পনা আছে।