ছিনতাইকারী চক্রের মূলহোতাসহ দুইজন গ্রেপ্তার

ওয়াসিম জাফর।

বহুরুপী ছিনতাইকারী চক্রের মূলহোতাসহ আরও দুজন ধরা পড়েছে পুলিশের জালে৷ কখনো সাংবাদিক, কখনো গোয়েন্দা পুলিশ, কখনোবা ম্যাজিস্ট্রেট সেজে বিদেশযাত্রীদের সর্বস্ব হাতিয়ে নিতেন তারা। এর আগে এ চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে বিদেশফেরত যাত্রীর স্বর্ণ-টাকা উদ্ধার হয়েছিল পুলিশি অভিযানে।

গ্রেপ্তার দুজন হলেন চক্রের মূলহোতা মো. হোসেন (৩৩) এবং মো. ওমর ফারুক সালমান (২০)।

nagad

বৃহস্পতিবার নগরীর কর্ণফুলী থানার টোলব্রিজ এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময়  হোসেনের কাছ থেকে একটি মোটরসাইকেল, বিভিন্ন পত্রিকার ভিজিটিং কার্ড এবং ভুক্তভোগীর ছিনতাইকৃত মোবাইলফোন উদ্ধার করা হয়।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) রাতে এসব তথ্য জানান কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস.এম. ওবায়েদুল হক।

পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তাররা বিদেশফেরত যাত্রীদের টার্গেট করে কখনো কাস্টমস কর্মকর্তা, কখনো ডিবি পুলিশ কখনোবা সাংবাদিক পরিচয় দিতো। এরপর গাড়িতে উঠে সুবিধাজনক স্থানে নিয়ে সর্বস্ব লুট করে নিতো। গত ২৫ মার্চ বিদেশফেরত যাত্রী মোহাম্মদ নুর উদ্দিন আশরাফীর কাছ থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে গাড়ি থামিয়ে সবকিছু লুট করে নেয় তারা।  তিনি প্রাইভেটকার যোগে মালামাল নিয়ে হাটহাজারী ফিরছিলেন। পথেই বায়েজিদ লিংক রোড এলাকায় ওয়াকটকির ইশারায় গাড়ি থামায় ছিনতাইকারীরা।

পরে তারা নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে প্রাইভেটকারে ওঠে বসে। এ সময় তাদের কাছে অবৈধ মালামাল আছে বলে তল্লাশির জন্য মনছুরাবাদ ডিবি অফিসে নিয়া যাওয়ার কথা বলে সিআরবি কাঠের বাংলো এলাকায় নিয়ে গিয়ে তাদের সঙ্গে থাকা ১২টি স্বর্ণের হাতের বালা, ৯টি স্বর্ণের রিং, ৬টি স্বর্ণের লকেটসহ ৩শ’ গ্রাম স্বর্ণালংকার, ৩টি মোবাইল সেট; যার মধ্যে একটি আইফোন-১২, একটি স্যামসাং এস ২৩ আল্ট্রা, একটি স্যামসাং এস ২৪ আল্ট্রা এবং ৩টি ডেল ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ ও ৬ কার্টুন ইএসএসই ব্র্যান্ডের সিগারেট ছিনতাই করে নিয়ে যায়।

পরে এ ঘটনায় গত ২৮ মার্চ ভুক্তভোগী মোহাম্মদ নুর উদ্দিন আশরাফী বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করে। মামলা দায়েরের পর পরই কোতোয়ালী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে তদন্ত শুরু করে।

এ বিষয়ে কোতোয়ালী থানার ওসি এস.এম. ওবায়েদুল হক  বলেন, ‘এজাহার দায়েরের পর গত ২৮ মার্চ থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত কোতোয়ালী, হাটহাজারী ও আনোয়ারা উপজেলায় অভিযান চালিয়ে এই চক্রের ৬ জনকে গ্রেপ্তার করি। সেসময় তাদের কাছ থেকে লুট করা বিভিন্ন মালামাল উদ্ধার করা হয়। সবশেষ গতকাল (বৃহস্পতিবার) আমরা চক্রের মূলহোতাসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। এ নিয়ে চক্রের মোট ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

ওসি বলেন, ‘মূলহোতা হোসেনের ব্যাগ তল্লাশি করে তার ব্যাগ থেকে তার নামে ছাপানো বিভিন্ন নামসর্বস্ব অনলাইন নিউজ পোর্টালের ভিজিটিং কার্ড পাওয়া যায়। সে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাছে নিজেকে একেক সময় একেক অনলাইন নিউজ পোর্টালের সাংবাদিক পরিচয় দিতো। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে বিভিন্ন সময় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে এয়ারপোর্ট থেকে আসা যাত্রীদের নিকট হতে স্বর্ণালংকারসহ বিভিন্ন মালামাল হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছে।’

‘তাদেরকে যাতে যাত্রীরা ডিবি পুলিশ মনে করে্ সেজন্য তাদের কাছে ওয়াকিটকি থাকতো। তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বেকারি, বিভিন্ন ফ্যাক্টরিতে ম্যাজিস্ট্রেট সেজে মোবাইল কোর্টও পরিচালনা করতো। তাদের বিধি মোতাবেক বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হয়েছে।’ যোগ করেন এই কর্মকর্তা।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

সাম্প্রতিক