একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা মণ্ডলীর সভাপতি শাহরিয়ার কবির ও সাবেক রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১২টার দিকে রাজধানীর মহাখালীর বাসা থেকে শাহরিয়ার কবিরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শাহরিয়ার কবিরের বিষয়টি নিশ্চিত করে তেজগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোবারক হোসেন জানান, তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। তাকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
গত ২০ আগস্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব (শিক্ষা ও আইন) মুফতি হারুন ইজাহার চৌধুরী মতিঝিলের শাপলা চত্বরে ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশ ঘিরে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগ করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আরও ২৩ জনের বিরুদ্ধে। অভিযুক্তদের একজন শাহরিয়ার কবির। এছাড়া, গত ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালীতে শিক্ষার্থী ইমরান হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলার আসামি শাহরিয়ার কবির।
এর আগে শ্যামলীতে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতাল থেকে নূরুল ইসলাম সুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. ছালেহ উদ্দিন জানান, রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় দায়ের করা একটি হত্যা মামলায় আসামি হিসেবে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
নূরুল ইসলাম সুজনের বাড়ি পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার ময়দানদিঘিতে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র ছিলেন। এছাড়া তিনি ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক ও আইন বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। নূরুল ইসলাম সুজন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সহ-সম্পাদক ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন।
নূরুল ইসলাম ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে পঞ্চগড়-২ আসন থেকে অংশগ্রহণ করে পরাজিত হয়েছিলেন। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। এরপর টানা তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি রেলপথমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন তিনি।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, উপদেষ্টা ও শীর্ষ পর্যায়ের নেতা মিলিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৩১ জনকে।