খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি।
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার ঘটনায় পলাতক আসামি মোস্তাফিজুর রহমান ও ফয়সাল আলীকে খাগড়াছড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় নেওয়া হচ্ছে।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে ডিবির একাধিক টিম বুধবার (২৬ জুন) দুপুর থেকে খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করে।
ডিবি সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের এডিসি জুনায়েদ আলম জানান, এমপি আনার হত্যার ঘাতক দলের অন্যতম দুই পলাতক আসামি ফয়সাল ও মোস্তাফিজকে ধরতে খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন পাহাড়ে হেলিকপ্টার দিয়ে সাঁড়াশি অভিযান চলছে। সেখানে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। অভিযান শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।
গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে ভারতে যান এমপি আনার। ওঠেন পশ্চিমবঙ্গে বরাহনগর থানার মণ্ডলপাড়া লেনে গোপাল বিশ্বাস নামে এক বন্ধুর বাড়িতে। পরদিন চিকিৎসক দেখানোর কথা বলে ওই বাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন তিনি।
পাঁচদিন পর ১৮ মে বরাহনগর থানায় আনোয়ারুল আজীম নিখোঁজের বিষয়ে একটি জিডি করেন বন্ধু গোপাল বিশ্বাস। এরপরও খোঁজ মেলেনি তিনবারের এই সংসদ সদস্যের। ২২ মে হঠাৎ খবর ছড়ায়, কলকাতার পার্শ্ববর্তী নিউটাউন এলাকায় সঞ্জীবা গার্ডেনস নামে একটি আবাসিক ভবনের বিইউ ৫৬ নম্বর রুমে আনোয়ারুল আজীম খুন হয়েছেন। ঘরের ভেতর পাওয়া যায় রক্তের ছাপ। তবে ঘরে মেলেনি মরদেহ।
পুলিশ বলছে, সংসদ সদস্য আনার কলকাতা যান ১২ মে। সেখানে বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাসায় ওঠেন। পরদিন তাঁকে প্রলুব্ধ করে নিউ টাউনের ওই ফ্ল্যাটে নেওয়া হয়। তখন ওই ফ্ল্যাটে উপস্থিত ছিলেন শিলাস্তি, শিমুল, তানভীর, সহযোগী জিহাদ হাওলাদার, সিয়াম হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান, ফয়সাল আলী।
গত ১৩ মে কলকাতার সঞ্জিভা গার্ডেন্সের ফ্ল্যাটে খুন হন আনোয়ারুল আজীম। তদন্ত–সংশ্লিষ্ট পুলিশের ভাষ্য মতে, এই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি যুক্ত ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান ও ফয়সাল আলী। তাঁরা খুনের আগে গত ২ মে কলকাতায় গিয়েছিলেন। এরপর ২১ মে সংসদ সদস্য খুনের ঘটনায় দেশে শিমুল ভূঁইয়া, তাঁর ভাতিজা তানভীর ভূঁইয়া ও শিলাস্তি রহমান গ্রেপ্তার হলে মোস্তাফিজুর ও ফয়সাল আত্মগোপনে চলে যান।
গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, আনোয়ারুল আজীম খুনের খবর প্রকাশের পর থেকেই ক্রমাগত অবস্থান পরিবর্তন করছিলেন মোস্তাফিজুর ও ফয়সাল। তাঁদের ধরতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় খাগড়াছড়িতে এই দুজনের অবস্থানের কথা জানা যায়। পরে ডিবির একাধিক দল হেলিকপ্টার নিয়ে অভিযানে যুক্ত হয়। ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন–অর–রশীদও হেলিকপ্টারযোগে খাগড়াছড়িতে যান।