ডলার অ্যান্ডোর্সমেন্ট কি কেন কিভাবে করবেন

গুরুত্বপূর্ণ। দেশের ভেতরে শুধুমাত্র বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদিত ব্যাংক, মানি এক্সচেঞ্জার ও ডিলাররা আইনগতভাবে ডলার কেনা-বেঁচা করতে পারে। এছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ডলারের লেনদেনে জড়ানো বেআইনি।

চলুন, এবার এই এনডোর্সমেন্ট পদ্ধতিটির আরও খুঁটিনাটি জেনে নেওয়া যাক।

ব্যাংক থেকে ডলার এনডোর্স করার প্রক্রিয়া
দেশের যে কোনো সরকারি বা বেসরকারি ব্যাংক পাসপোর্ট বইয়ের শেষের দিকে এনডোর্সমেন্ট পাতায় সীল দিয়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ ডলারের পরিমাণ লিখে দেয়। এটিই হলো অনুমোদনকৃত ডলারের পরিমাণ। অনুমোদিত পরিমাণের বেশি ডলার বিনিময় করতে পারবেন না।

তবে এনডোর্সে যত পরিমাণ ডলারের কথা লেখা থাকবে আপনার কাছে এর কম ডলার থাকলে অসুবিধা নেই। ডলার এনডোর্সমেন্টে আপনার ডলার ব্যবহারের সর্বোচ্চ সীমা উল্লেখ থাকে।

সোনালী ব্যাংক ও অন্যান্য ব্যাংকে ডলার এনডোর্সমেন্টের ভিন্নতা
বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর মধ্যে শুধু সোনালী ব্যাংকে ডলার এনডোর্সের জন্য সেখানে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকার বা নতুন করে করার প্রয়োজন পড়ে না। শুধুমাত্র পাসপোর্ট নিয়ে গেলেই কাজ হয়ে যায়। ব্যাংক কর্মকর্তা ওই দিনের ডলার রেট অনুসারে টাকা হিসাব করে সার্ভিস চার্জের বিনিময়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ ডলারের অংক উল্লেখ করে পাসপোর্টে সীল মেরে দেন।

অন্যদিকে, বাকি সকল ব্যাংকে এই কাজের জন্য আপনার সেখানে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকতে হয়। এছাড়া বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে সাধারণত লোকাল শাখাগুলোতে এনডোর্স করা হয় না। এই সুবিধা দিয়ে থাকে শুধুমাত্র এডি বা অনুমোদিত ডিলার, শাখা বা ফরেইন এক্সচেঞ্জগুলো। বিভাগীয় শহর ও কিছু বাণিজ্যিক এলাকা ছাড়া কোথাও বেসরকারি ব্যাংকগুলোর এডি শাখা নেই।

এছাড়াও বেসরকারি ব্যাংকগুলোর প্রত্যেকটিতে ডলার এনডোসিং-এর শর্তগুলোতে কিছু ভিন্নতা থাকে। তাই চূড়ান্তভাবে এনডোর্সমেন্টের পূর্বে অবশ্যই সেগুলোর সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেওয়া জরুরি।

ডুয়েল কারেন্সি কার্ডের বিপরীতে ডলার এনডোর্স
গত কয়েক বছর ধরেই বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে বিভিন্ন ব্যাংকের ডুয়েল কারেন্সি কার্ড সেবাগুলো। অনেকেই সরাসরি ডলার না তুলে এই আন্তর্জাতিক ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের বিপরীতে বৈধভাবে ডলার জমা করে নিচ্ছেন।

এই সেবার মাধ্যমে দেশ থেকে কার্ডে ডলার জমা করে বিদেশে নিয়ে গিয়ে সেখানে খরচ করা যায়। এমনকি প্রয়োজনে অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রাতেও পরিবর্তন করে নেওয়া যায়। তাছাড়া অনলাইন কেনাকাটার সুবিধা তো থাকছেই। এমনকি দেশের ভেতরে থেকেও বিশ্বের বিখ্যাত সব ই-কমার্স সাইটগুলো থেকে কোনো ঝামেলা ছাড়াই নানা সেবা ও পণ্য কেনা যায়।

এনডোর্সের সীমা ও মেয়াদ
ডলার এনডোর্সের পরিমাণ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সুষ্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তি বিদেশ গমনকালে এক বছরে সর্বোচ্চ ১২ হাজার ডলার বা সমমানের বৈদেশিক মূদ্রা এনডোর্স করতে পারবেন।

চিকিৎসার জন্য সর্বোচ্চ ১০ হাজার ডলারের অনুমোদন নেওয়া যাবে, তবে এর জন্য অবশ্যই উপযুক্ত কাগজপত্র দেখাতে হবে। এর চেয়ে বেশি প্রয়োজন হলে যথাযথ কারণ ও প্রমাণ সহ যোগাযোগ করতে হবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের সঙ্গে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মানুসারে, ডুয়েল কারেন্সি আন্তর্জাতিক ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডের বিপরীতে পাসপোর্টের মেয়াদ যতদিন ততদিন থাকবে এনডোর্সমেন্টের মেয়াদ। তবে এক্ষেত্রে কিছু শর্ত রয়েছে: খরচের পরিমাণ এনডোর্সকৃত ডলারের সর্বোচ্চ লিমিট অর্থাৎ ১২ হাজার অতিক্রম করতে পারবে না। এই সুবিধা প্রবাসী বাংলাদেশি বা শিক্ষার্থীদের জন্য প্রযোজ্য নয়।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

সাম্প্রতিক