Cvoice24.com
প্রচ্ছদচট্টগ্রাম (মহানগর, উত্তর, দক্ষিণ)
চট্টগ্রাম কারাগারে কয়েদির মৃত্যু, নির্যাতনের অভিযোগ
সিভয়েস ২৪ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:৪৪, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
চট্টগ্রাম কারাগারে কয়েদির মৃত্যু, নির্যাতনের অভিযোগ
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি অবস্থায় থাকা রুবেল দে নামে এক হাজতির অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। নিহতের স্বজনরা বলছেন, কারাগারের ভেতরে কারারক্ষী বা অন্য কয়েদিরা তাকে নির্যাতন করেছেন। তবে জেল সুপারের দাবি, মানসিক সমস্যা ‘উইথড্রল সিন্ড্রোম’ ছিল তার।
সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (চমেক) জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
nagad
nagad
রুবেল দে বোয়ালখালীর শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ জ্যৈষ্টপুরার বাসিন্দা সুনীল দের ছেলে। তার দুই মেয়ে রয়েছে এবং তার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। তিনি কারাগারের ৩ নম্বর পদ্মা ওয়ার্ডে বন্দি ছিলেন।
রুবেলের খালাতো ভাই রাজীব বলেন, ‘গত ২৮ জানুয়ারি যখন রুবেলের সাথে আমাদের দেখা হয় তখনও রুবেল একদম সুস্থ ছিল। এরপর ২ ফেব্রুয়ারি তার সাথে আবার দেখা হয় আমাদের। তখন সে হাঁটতে পারছিল না। চারজন কারারক্ষী হুইল চেয়ারে করে তাকে নিয়ে এসেছিল। এ সময় রুবেলের মুখ থেকে লালা ঝরছিলো। আমরা রুবেলের ডান ভ্রু ও শরীরের আঘাতের চিহ্ন দেখতে পেয়েছি। সে সময় রুবেল এক রকম অচেতন অবস্থায় ছিল। আমরা সেদিন কথা বলতে পারিনি।’
একজন কারারক্ষীর বরাতে রাজীব আরও বলেন, ‘রুবেলের লাশের স্ট্রেচারের পাশে থাকা এক কারারক্ষী জানান, বুকে ব্যথা শুরু হলে ভোরে রুবেলকে হাসপাতালে আনা হয়। সে সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আমরা লাশের বুকে, পিঠে, গোপনাঙ্গ ও হাতে ছোপছোপ অস্বাভাবিক দাগ পেয়েছি। যা থেকে বোঝা যায়, মৃত্যুর আগে তাকে নির্যাতন করা হয়েছে।’
রুবেলের মরদেহের সুরতহাল করা চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আলামিন বলেন, ‘সুরতহাল করার সময় চোখের উপরে কপালে একটি আঘাতের চিহ্ন, শরীরের কয়েকটি স্থানে ও দুই হাতের কব্জিতে দাগ পেয়েছি। ময়নাতদন্তের মাধ্যমে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।’
রুবেল মাদকাসক্ত দাবি করে চট্টগ্রাম কারাগারের ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র জেল সুপার মুহাম্মদ মঞ্জুর হোসেন বলেন, ‘মাদক নেওয়ার কারণে হাজতি রুবেলের মানসিক সমস্যা উইথড্রল সিন্ড্রোম ছিল। আমরা প্রথমে তাকে আলাদা ওয়ার্ডে রেখেছিলাম। পরে তাকে পদ্মা ৩ নম্বর ওয়ার্ডে অন্য বন্দিদের সঙ্গে রাখা হয়। সেখানে মানসিক সমস্যা আছে এমন একাধিক বন্দিদের রাখা হয়েছে। ভোর রাতে বুকে ব্যথার কথা বললে আমরা তাকে কারা হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। কারাগারে কারারক্ষী বা অন্য বন্দি তাকে নির্যাতন করেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু তার মানসিক সমস্যার লক্ষণ ছিল, তিনি নিজে ঠিক মতো হাঁটাচলা করতে পারতেন না, তাই টয়লেটে যাওয়ার সময় ছোটখাটো আঘাত পেয়ে থাকতে পারেন। তা ছাড়া, অনেক সময় কব্জিতে হাতকড়া চেপে লাগানোর কারণে দাগ তৈরি হতে পারে।’