তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) মতো সিভিল সোসাইটি অর্গাইনাইজেশনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কিন্তু সংস্থাটি মাঝে মাঝে রাজনৈতিক দলের মতো বিবৃতি দেয়। গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রামে এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। টিআইবির সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে গণমাধ্যমে ‘আওয়ামী লীগের ৮৭ শতাংশ প্রার্থী কোটিপতি’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর তথ্যমন্ত্রী চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেন যে, গ্রামেও ৫ কাঠা জমির দাম ১ কোটি টাকা। আর ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরে ১ কোটি টাকার নিচে জমি নাই। অর্থাৎ দেশে বহু মানুষই কোটিপতি। এ বিষয় নিয়ে টিআইবি আবার ব্যাখ্যা দিলে মন্ত্রী তার বিবৃতিতে বলেন, জনগণ টিআইবির কথায় বিভ্রান্ত হয়নি। তারা ঠিক বুঝতে পেরেছে যে, ‘কোটিপতি’ শব্দটি এখন বিশেষ কোনো ভার বহন করে না। খবর বাসসের।
পদ্মা সেতুতে কল্পিত দুর্নীতি নিয়ে টিআইবির নানা বিবৃতির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন করবে না বলে জানানোর পর টিআইবি বলেছিল, বিকল্প উৎস হতে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন করতে সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা দৃষ্টি সরানোর (দুর্নীতির অভিযোগ থেকে) উপায় বলে মনে হতে পারে এবং যদি এই সিদ্ধান্ত সফলও হয় তাতেও সরকারের গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে না। আবার তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেনের পদত্যাগের পরেও টিআইবি মন্তব্য করেছিল, এখন অনেক দেরি হয়ে গেল। কয়েক মাস আগে বিশ্বব্যাংক যখন দুর্নীতির অভিযোগ আনল তখনই পদত্যাগ হওয়া উচিত ছিল। অথচ পরে কানাডার ফেডারেল আদালতে প্রমাণ হয়েছে, পদ্মা সেতু নিয়ে কোনো দুর্নীতি হয়নি। অর্থাৎ টিআইবির এসব বিবৃতি ছিল ভিত্তিহীন, মনগড়া।
করোনা মহামারির সময়ও টিআইবি একের পর এক বিবৃতি দিয়েছে, যার অনেকগুলোই পরে ভ্রান্ত প্রমাণ হয়েছে উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দুর্নীতির নানা কল্পিত চিত্রের পাশাপাশি টিআইবি বলেছিল, দেশের ৭.৮ ভাগ মানুষ অর্থাৎ প্রায় দেড় লাখ মানুষ নাকি করোনায় বিনা চিকিৎসায় মারা গেছে। অথচ এ সময় মোট মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৩০ হাজারেরও কম।
পূর্ব উদাহরণ দিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ২০১৫ সালে টিআইবি আমাদের মহান জাতীয় সংসদকে ‘পুতুল নাচের নাট্যশালা’ বলেছিল। আর তারা পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে হত্যার বিরুদ্ধে কোনো বিবৃতি দেয় না। অথচ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কেউ কিল–ঘুষি খেলে বিবৃতি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এগুলো রাজনৈতিক দলের মতো আচরণ।
তিনি বলেন, দেশে গণতন্ত্রকে সংহত করতে, দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠন ও সুশাসনের জন্য টিআইবির মতো প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু তাদের প্রতিবেদন–বিবৃতি যেন একপেশে তথ্যনির্ভর ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত না হয়, সেটিই প্রত্যাশা।